ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেছেন বা শেষের পথে তাদের জন্য। অনেকে ভাবেন ডিপ্লোমা তো শেষ করেছি এবার কি করব। বিএসসি তে পড়ব, নাকি জব করব, নাকি নিজের কিছু শুরু করব। যদি আপনি এর যেকোন একটা নিয়ে পড়ে থাকেন তো জীবনে অনেকগুলো ধাক্কা খেতে চলেছেন।
কারণ, প্রথমত এটা বাংলাদেশ, আর দ্বিতীয়ত আমরা প্রায় সবাই মিডিল ক্লাস পরিবারের।
ফ্যাক্ট-১ঃ ধরুন আপনি বিএসসি করছেন, আপনার পরিবার থেকে আপনার পেছনে আরো অনেকগুলো অর্থ খরচ হতে চলেছে। জীবনে সফল হতে গেলে, কষ্ট করতেই হবে। আর যারা অর্থ খরচ করে উপার্জনের কথা চিন্তা না করে, তারা পরে বাস্তবতার চাকায় পিষ্ট হয়ে যায়। বাবা-মা কখনো বলবেনা তাদের টাকা দিতে কষ্ট হচ্ছে, কিন্তু আসলেই কষ্ট হয়, আপনার বয়স বাড়ার সাথে সাথে এটাও বোঝা উচিত। বিএসসি শেষে সেই কম বেতনই পাবেন, চাকুরী ক্ষেত্রে বর্তমানে যোগ্যতার পর দক্ষতা না থাকলে লাভ নাই। কোম্পানি তো আর আপনার ডিগ্রী ধুয়ে পানি খাবে না।
ফ্যাক্ট-২ঃ ধরুন, আপনি চাকুরি করছেন। সংসার চালাতে ব্যস্ত। বাবা মাকে ভালোবাসেন। বাসায় প্রতি মাসে টাকা পাঠান। বাবা-মা খুশি, বয়স বাড়ছে, বিয়ে করার ইচ্ছে—জব নিয়েই থাকবেন। ভুল করছেন। এখন এনার্জি আছে, পড়াশুনা করে যান। ওয়ার্ল্ড স্যাটাসে এখন স্নাতক মানে অর্নাস ছাড়া কোথাও দাম পাবেন না। চাকুরি ক্ষেত্রে একসময় আটকে যাবেন, প্রোমশান হবে না। তখন এনার্জী থাকবে না, থাকবে শুধু আফসোস।
ফ্যাক্ট-৩ঃ এবার ধরুন, আপনি পরিবার থেকে কিছু টাকা নিয়ে নিজের কিছু শুরু করেছেন, ভাল চলছে সব। কিন্তু একটা সময় নিজের ব্যবসা বা অফিসের পরিধিটা বাড়ছে না। কারণ, শুধুই আপনি। আপনার কর্মচারী চালানোর কি কোন জ্ঞান আছে? উত্তরটা সহজ, নেই। কেননা আপনি জব জীবনে করেন নি। কর্মচারীদের বস’রা কিভাবে সামাল দেন- তা তো দেখেন নি। আপনার বড় কিছু করার জ্ঞান আছে? আপনেও জানেন নাই? কারণ, আপনার শিক্ষা-যোগ্যতার লেভেলটা ঐ ডিপ্লোমা পর্যন্তই।
তাহলে করণীয়,
১. যদি আপনি ডিপ্লোমাতে ভালমত কাজ শিখে থাকেন, তাহলে ইন্টার্নির পরে বা ডিপ্লোমার পর থেকে কাজে লেগে যান অর্থাৎ ছোট হোক বা বড়, আপনার সাব্জেক্ট ও পছন্দসই জব করুন। আর যদি ডিপ্লোমাতে কাজ না শিখে থাকেন তবে কিছু টাকা খরচ করে আপনার সাব্জেক্ট রিলেটেড কোর্স বা কাজ শিখে ফেলুন। কাজ না পাড়লে সার্টিফিকেট দিয়ে কিচ্ছু হবে না। এর পর জব এর জন্য ট্রাই করুন।
সরকারীঃ আপনি সরকারী চাকুরিগুলোতে এপ্লাই করুন। ইন্টারনেট থেকে সার্কুলারগুলো নামিয়ে, বিএসসি করার সুবিধা বিবেচনা করে জব এ এপ্লাই করবেন, বাসায় জব সলিউশানের বই বা কোচিং করে নিজেকে প্রস্তুত রাখবে। স্থাইয়ী হোক বা অস্থায়ো সব ধরনের পোস্টেই এপ্লাই করবেন। মনে রাখবেন, সরকারী চাকুরি সোনার হরিণ, অস্থায়ী হলে পড়ে স্থায়ী করার সুযোগ বা সরকারী অন্য কোন অফিসে জয়েন করার ক্ষেত্রে পাবেন অগ্রাধিকার।
আর একটা কথা পারলে নন-ক্যাডার বিসিএস ও শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষাটা দিয়ে দেবেন। সরকারী চাকুরি আপনার জন্য তাহলে সহজ হবে।
বেসরকারীঃ ইন্টারনেট থেকে হোক বা ভাই-ব্রাদার-আত্বীয়-স্বজন সবাইকে আপনার জবের জন্য রিকুয়েস্ট করবেন। সবাইকে প্রয়োজনে নিয়মিত কল করবেন। বড় বা ছোট নামকরা কোম্পানিগুলোতে নিয়মিত খোজ নেবেন, আর জবে এপ্লাই করবেন। কাজের প্যারা গুলো মানিয়ে নিন, বসকে কাজ বুঝিয়ে দিয়ে বসের চোখে সেরা হইয়ে উঠুন আর পড়াশুনার ক্ষেত্রে যেন বস ছাড় দেয় সেদিকে নজর দেবেন।
২. এবার চাকুরির পাশাপাশি পড়াশুনাটা শুরু করুন, বিএসসি তে ইভিনিং শিফটে ভর্তি হন। কষ্ট করতে শিখুন জীবনে কখনো ঠেকবেন না। স্যারদের সঙ্গে ও ক্লাস টপারদের সঙ্গে খাতির রাখুন, পড়াশুনার প্যারা হালকা হবে। কোন মতে ৩.০০ সিজিপিএ রাখুন। ব্যাস আপনাকে আর ধরে কে। পরীক্ষার সময় রুটিন প্রিন্ট করে অফিসের বসের হাতে দিবেন আর ছুটি নিয়ে নিবেন।
৩. এরপর বসে থাকবেন না, মানুষের জীবনের সব সময়টা সমান যায় না, ব্যাকাপ প্লান রাখুন। জব করছেন, টাকা আসছে। সেই টাকা থেকে ভার্সিটিতে দিচ্ছেন, আর একটু টাকা বাচান। না হয় কম দামি বাসায় থাকলেন, হাতখরচটা কমিয়ে দিলেন। জমানো টাকা দিয়ে বিএসসি শেষে বা বিএসসির ফাকে ব্যবসাঁ করুন বা নিজের কোম্পানির স্বপ্ন গুলোর পেছনে খরচ করুন।
ফলাফলঃ বিএসসি করেছেন, ডিগ্রী আছে। চাকুরি করেছেন টাকা আছে। ব্যবসা বা নিজের কোম্পানি করেছেন পায়ের নিচের মাটিটা শক্ত আছে। চাকুরি ক্ষেত্রে পাবেন প্রোমোশান, নিজের কোম্পানির বা স্বপ্নকে করতে পারবেন বড়। বিএসসির-চাকুরির সাড়ে তিন বছর পর আপনার কাছে সব থাকবে, এর ফল সারা জীবন পাবেন।
সতর্কবার্তাঃ
১. ভুলেও কোন চাকুরি পাবার পর, এক দুই মাস পর চাকুরি ছেড়ে দেবেন না। এক্কেবারে পস্তাবেন, সর্ব নিন্ম ৬ মাস তো জব করবেনই, ১ বছর জব করতে পারলে ভাল। অভিজ্ঞতার দামটা পাবেন।
২. পড়াশুনাও থামিয়ে দেবেন না, তাহলে কিন্তু নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মাড়বেন। যোগ্যতাহীনতা আপনাকে একসময় কষ্ট দেবে।
৩. একই ভাবে ব্যাকাপ প্লান হিসেবে ব্যবসা বা নিজের কোম্পানী না করলে, চাকুরি ক্ষেত্রে অনাকাঙ্খিত ধাক্কা সামলাতে পারবেন।
লেখকঃ Mohammad Mahbub Talukder
কারণ, প্রথমত এটা বাংলাদেশ, আর দ্বিতীয়ত আমরা প্রায় সবাই মিডিল ক্লাস পরিবারের।
ফ্যাক্ট-১ঃ ধরুন আপনি বিএসসি করছেন, আপনার পরিবার থেকে আপনার পেছনে আরো অনেকগুলো অর্থ খরচ হতে চলেছে। জীবনে সফল হতে গেলে, কষ্ট করতেই হবে। আর যারা অর্থ খরচ করে উপার্জনের কথা চিন্তা না করে, তারা পরে বাস্তবতার চাকায় পিষ্ট হয়ে যায়। বাবা-মা কখনো বলবেনা তাদের টাকা দিতে কষ্ট হচ্ছে, কিন্তু আসলেই কষ্ট হয়, আপনার বয়স বাড়ার সাথে সাথে এটাও বোঝা উচিত। বিএসসি শেষে সেই কম বেতনই পাবেন, চাকুরী ক্ষেত্রে বর্তমানে যোগ্যতার পর দক্ষতা না থাকলে লাভ নাই। কোম্পানি তো আর আপনার ডিগ্রী ধুয়ে পানি খাবে না।
ফ্যাক্ট-২ঃ ধরুন, আপনি চাকুরি করছেন। সংসার চালাতে ব্যস্ত। বাবা মাকে ভালোবাসেন। বাসায় প্রতি মাসে টাকা পাঠান। বাবা-মা খুশি, বয়স বাড়ছে, বিয়ে করার ইচ্ছে—জব নিয়েই থাকবেন। ভুল করছেন। এখন এনার্জি আছে, পড়াশুনা করে যান। ওয়ার্ল্ড স্যাটাসে এখন স্নাতক মানে অর্নাস ছাড়া কোথাও দাম পাবেন না। চাকুরি ক্ষেত্রে একসময় আটকে যাবেন, প্রোমশান হবে না। তখন এনার্জী থাকবে না, থাকবে শুধু আফসোস।
ফ্যাক্ট-৩ঃ এবার ধরুন, আপনি পরিবার থেকে কিছু টাকা নিয়ে নিজের কিছু শুরু করেছেন, ভাল চলছে সব। কিন্তু একটা সময় নিজের ব্যবসা বা অফিসের পরিধিটা বাড়ছে না। কারণ, শুধুই আপনি। আপনার কর্মচারী চালানোর কি কোন জ্ঞান আছে? উত্তরটা সহজ, নেই। কেননা আপনি জব জীবনে করেন নি। কর্মচারীদের বস’রা কিভাবে সামাল দেন- তা তো দেখেন নি। আপনার বড় কিছু করার জ্ঞান আছে? আপনেও জানেন নাই? কারণ, আপনার শিক্ষা-যোগ্যতার লেভেলটা ঐ ডিপ্লোমা পর্যন্তই।
তাহলে করণীয়,
১. যদি আপনি ডিপ্লোমাতে ভালমত কাজ শিখে থাকেন, তাহলে ইন্টার্নির পরে বা ডিপ্লোমার পর থেকে কাজে লেগে যান অর্থাৎ ছোট হোক বা বড়, আপনার সাব্জেক্ট ও পছন্দসই জব করুন। আর যদি ডিপ্লোমাতে কাজ না শিখে থাকেন তবে কিছু টাকা খরচ করে আপনার সাব্জেক্ট রিলেটেড কোর্স বা কাজ শিখে ফেলুন। কাজ না পাড়লে সার্টিফিকেট দিয়ে কিচ্ছু হবে না। এর পর জব এর জন্য ট্রাই করুন।
সরকারীঃ আপনি সরকারী চাকুরিগুলোতে এপ্লাই করুন। ইন্টারনেট থেকে সার্কুলারগুলো নামিয়ে, বিএসসি করার সুবিধা বিবেচনা করে জব এ এপ্লাই করবেন, বাসায় জব সলিউশানের বই বা কোচিং করে নিজেকে প্রস্তুত রাখবে। স্থাইয়ী হোক বা অস্থায়ো সব ধরনের পোস্টেই এপ্লাই করবেন। মনে রাখবেন, সরকারী চাকুরি সোনার হরিণ, অস্থায়ী হলে পড়ে স্থায়ী করার সুযোগ বা সরকারী অন্য কোন অফিসে জয়েন করার ক্ষেত্রে পাবেন অগ্রাধিকার।
আর একটা কথা পারলে নন-ক্যাডার বিসিএস ও শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষাটা দিয়ে দেবেন। সরকারী চাকুরি আপনার জন্য তাহলে সহজ হবে।
বেসরকারীঃ ইন্টারনেট থেকে হোক বা ভাই-ব্রাদার-আত্বীয়-স্বজন সবাইকে আপনার জবের জন্য রিকুয়েস্ট করবেন। সবাইকে প্রয়োজনে নিয়মিত কল করবেন। বড় বা ছোট নামকরা কোম্পানিগুলোতে নিয়মিত খোজ নেবেন, আর জবে এপ্লাই করবেন। কাজের প্যারা গুলো মানিয়ে নিন, বসকে কাজ বুঝিয়ে দিয়ে বসের চোখে সেরা হইয়ে উঠুন আর পড়াশুনার ক্ষেত্রে যেন বস ছাড় দেয় সেদিকে নজর দেবেন।
২. এবার চাকুরির পাশাপাশি পড়াশুনাটা শুরু করুন, বিএসসি তে ইভিনিং শিফটে ভর্তি হন। কষ্ট করতে শিখুন জীবনে কখনো ঠেকবেন না। স্যারদের সঙ্গে ও ক্লাস টপারদের সঙ্গে খাতির রাখুন, পড়াশুনার প্যারা হালকা হবে। কোন মতে ৩.০০ সিজিপিএ রাখুন। ব্যাস আপনাকে আর ধরে কে। পরীক্ষার সময় রুটিন প্রিন্ট করে অফিসের বসের হাতে দিবেন আর ছুটি নিয়ে নিবেন।
৩. এরপর বসে থাকবেন না, মানুষের জীবনের সব সময়টা সমান যায় না, ব্যাকাপ প্লান রাখুন। জব করছেন, টাকা আসছে। সেই টাকা থেকে ভার্সিটিতে দিচ্ছেন, আর একটু টাকা বাচান। না হয় কম দামি বাসায় থাকলেন, হাতখরচটা কমিয়ে দিলেন। জমানো টাকা দিয়ে বিএসসি শেষে বা বিএসসির ফাকে ব্যবসাঁ করুন বা নিজের কোম্পানির স্বপ্ন গুলোর পেছনে খরচ করুন।
ফলাফলঃ বিএসসি করেছেন, ডিগ্রী আছে। চাকুরি করেছেন টাকা আছে। ব্যবসা বা নিজের কোম্পানি করেছেন পায়ের নিচের মাটিটা শক্ত আছে। চাকুরি ক্ষেত্রে পাবেন প্রোমোশান, নিজের কোম্পানির বা স্বপ্নকে করতে পারবেন বড়। বিএসসির-চাকুরির সাড়ে তিন বছর পর আপনার কাছে সব থাকবে, এর ফল সারা জীবন পাবেন।
সতর্কবার্তাঃ
১. ভুলেও কোন চাকুরি পাবার পর, এক দুই মাস পর চাকুরি ছেড়ে দেবেন না। এক্কেবারে পস্তাবেন, সর্ব নিন্ম ৬ মাস তো জব করবেনই, ১ বছর জব করতে পারলে ভাল। অভিজ্ঞতার দামটা পাবেন।
২. পড়াশুনাও থামিয়ে দেবেন না, তাহলে কিন্তু নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মাড়বেন। যোগ্যতাহীনতা আপনাকে একসময় কষ্ট দেবে।
৩. একই ভাবে ব্যাকাপ প্লান হিসেবে ব্যবসা বা নিজের কোম্পানী না করলে, চাকুরি ক্ষেত্রে অনাকাঙ্খিত ধাক্কা সামলাতে পারবেন।
লেখকঃ Mohammad Mahbub Talukder
মন্তব্যসমূহ