সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ইন্টারভিউতে ভালো করার ১০টি উপায়!

বাংলাদেশে চাকরির বাজারে প্রতিযোগিতা অনেক বেশি। এ প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে আপনাকে খুব সচেতন হতে হবে। চাকরি বাছাইপর্ব থেকে শুরু করে নিয়োগ প্রক্রিয়ার প্রতিটি পর্যায়ে নির্ভুলভাবে পা ফেলতে হবে। প্রায় ১৫ কোটি মানুষের এ দেশে বেকার শ্রেণীর মানুষের অভাব নেই।
যে কোনো ধরনের একটা চাকরি পাওয়ার জন্য তারা মরিয়া। তাই প্রতিযোগিতায় আপনাকে খুব বুঝেশুনে চলতে হবে। যাতে কোনোভাবে ফসকে পড়ে না যান। চাকরির ক্ষেত্রে ফসকে পড়ার সিরিয়াস পর্যায় হলো ইন্টারভিউ পর্যায়। পছন্দসই চাকরি বাছাই করা, চাকরি সম্পর্কে বিভিন্ন খোঁজ-খবর নেয়া, নিয়োগের জন্য আবেদন করা, ভালো প্র‘তি নেয়া সব ধাপই আপনি নির্ভুলভাবে শেষ করেছেন। কিন্তু ইন্টারভিউতে ভালো করতে পারেননি। চাকরি পাওয়াটা আর আপনার হলো না।
এতোদিনের আশা-আকাঙ্ক্ষা, কষ্ট সব নিঃশ্বেষ হয়ে গেলো। অথচ ইন্টারভিউতে একটু ভালো করতে পারলেই চাকরিটা নিশ্চিত ছিল। এরকম ভুল যেনো আর না হয়, সেজন্য আপনাকে আগে ইন্টারভিউতে ভালো করার সহজ উপায়গুলো জানতে হবে। নিচে ইন্টারভিউতে ভালো করার সহজ উপায় সম্পর্কে দশটি টিপস দেয়া হলো।
১) চাকরিটি সম্পর্কে আপনার বিস্তৃত জ্ঞান থাকতে হবে। এ জ্ঞান অর্জনের জন্য আপনি ওই চাকরি সম্পর্কিত বিভিন্ন বই পড়তে পারেন। চাকরিটির কার্যক্ষেত্র পরিদর্শন করতে পারেন। এতে আপনার বাস্তব জ্ঞান বৃদ্ধি পাবে। ইন্টারভিউর ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকলে তো কোনো কথাই নেই। তাহলে তো আপনি ইন্টারভিউর জন্য সম্পূর্ণ পারফেক্ট।
২) ইন্টারভিউতে ভালো করতে চাইলে ওই প্রতিষ্ঠানটির কর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হবে। তাদের সঙ্গে চাকরি বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য নিয়ে আলোচনা করতে হবে। এতে চাকরিটি সম্পর্কে একটা স্বচ্ছ ধারণা পেয়ে যাবেন। ইন্টারভিউর প্রসঙ্গেও তাদের সঙ্গে কথা বলে নিতে পারেন। এসব চাকরির ইন্টারভিউতে সাধারণত কোন ধরনের প্রশ্ন করা হয়, উত্তর দেয়ার ক্ষেত্রে কোন ধরনের জটিলতায় পড়তে হয়, তা কিভাবে কাটিয়ে ওঠা যায়, এসব বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা করে নিলে ইন্টারভিউ দেয়া অনেকটা সহজ হয়ে যায়।
৩) মনের মধ্যে ভীতি কিংবা দুর্বলতা কাজ করলে ইন্টারভিউতে কখনো ভালো করা যায় না। এতে নিজের ওপর আত্মবিশ্বাস কমে যায়। হতাশার মধ্যে নির্ভুল উত্তর দেয়া কঠিন হয়ে পড়ে। তাই ইন্টারভিউর আগে আপনাকে দৃঢ় মনোবল সম্পন্ন হতে হবে। নিজের ওপর অগাধ বিশ্বাস রখতে হবে। তাহলেই আপনি সফল হতে পারবেন।
৪) ইন্টারভিউর ক্ষেত্রে পোশাক পরিচ্ছদের ওপর খুব সচেতন থাকা উচিত। একজন নিয়োগকর্তা প্রথমেই নজর দেবেন সাক্ষাৎকার দাতার পোশাক পরিচ্ছদের ওপর। পোশাক-পরিচ্ছদ দেখেই তিনি সাক্ষাৎকারদাতার স্মার্টনেস, বাহ্যিকগুণাবলী, চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য অনেকটা মেপে নেন। পোশাক পরিচ্ছদের দিক থেকে নূনতম স্ট্যান্ডার্ড বজায় না থাকলে নিয়োগকর্তা চাকরি প্রার্থীর ওপর আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। এর ফলে চাকরি পাওয়াটা তার পক্ষে কঠিন হয়ে যায়। তাই ভালো ইন্টারভিউ দিতে হলে আপনাকে অবশ্যই ভালো পোশাক নির্বাচন করতে হবে।
৫) নিয়োগকর্তার সামনে কখনো এমন কোনো আচরণ করা উচিত নয়, যাতে নিয়োগকর্তা তাকে অভদ্র হিসেবে চিহ্নিত করেন (কারণ অভদ্রদের কেউই পছন্দ করে না)। কিন্তু ভদ্র চাকরি প্রার্থীর ওপর নিয়োগকর্তারা অনেকটা দুর্বল থাকেন। প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে তার ওপর সুনজর রাখেন। সুতরাং ইন্টারভিউর সময় নিজের শালীন আচার-আচরণের ওপর খেয়াল রাখা উচিত।
৬) ইন্টারভিউতে গভীর মনোযোগী না হলে, প্রশ্নকর্তার কৌশলগত প্রশ্নের উত্তর দেয়া কঠিন হয়ে পড়ে। প্রশ্নকর্তাও তাকে প্রশ্ন করতে বিরক্তবোধ করেন। একজন অমনোযোগী মানুষ কোনো কিছুতেই ভালো করতে পারে না। শুধু ইন্টারভিউতে নয়, জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে গভীর মনোযোগী থাকা বাঞ্ছনীয়। তাহলে প্রতিটি কাজে নিজেকে সফল করা যায়।
৭) প্রশ্নকর্তা আপনাকে প্রশ্ন করেছেন। কিন্তু আপনি সঠিক উত্তরটি ভালোভাবে জানেন না। এ অবস্থায় আপনি কখনই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে উত্তর দিতে চেষ্টা করবেন না। অস্পষ্ট জবাব দিয়ে উত্তর শেষ করবেন না। এতে নিয়োগকর্তা বিরক্তবোধ করবেন। না জানলে ‘পারি না’ বলাই শ্রেয়। তখন প্রশ্নকর্তা অন্য কোনো প্রশ্নের উত্তর দেয়ার সুযোগ দেবেন।
৮) নিয়োগ কর্তার সামনে নিজেকে স্মার্ট করে তুলে ধরা ভালো। কিন্তু অতিরিক্ত স্মার্ট করে তুলে ধরাটাও শেষে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। জীবনের প্রতিটা ক্ষেত্রে একটা লিমিট রেখে পথে চলা উচিত।
৯) কথাবার্তার মধ্যেই মানুষ তার মনের ভাব সুস্পষ্টভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারে। সেজন্য প্রতিটা চাকরিপ্রার্থীকে বিশুদ্ধ উচ্চারণের ওপর অধিক জোর দেয়া আবশ্যক। বাচনভঙ্গি ভালো হলে সহজেই নিয়োগকর্তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা যায়।
১০) আপনি অনেক ইন্টারভিউ দিয়েছেন। কোনোটিতেই ভালো করতে পারেননি। সেজন্য হতাশ হলে চলবে না। আপনাকে আবারো চাকরির জন্য অ্যাপ্লাই করতে হবে। বার বার ইন্টারভিউতে অংশ নিতে হবে। তাতে আপনার অভিজ্ঞতা বেড়ে যাবে। আগের এ অভিজ্ঞতার জোরেই একসময় ইন্টারভিউতে টিকে থাকতে পারবেন। আপনার সম্ভাবনাময় চাকরির দরজাটিও খুলে যাবে।
পোস্টটি ফেসবুক এ শেয়ার করে অন্যদের জানার সুযোগ দিন।

সকলে ভিডিও টি দেখুন..................

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট: সাড়ে ৬ বছর ধরে বন্ধ ছাত্রাবাস, শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি

২০১০ সালের ৭ জানুয়ারি রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে সংঘর্ষে ছাত্রলীগের হামলায় নিহত হন ছাত্রমৈত্রীর রেজাওয়ানুল চৌধূরী সানি। এ ঘটনায় ক্যাম্পাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। ওই দিন বিকেল পাঁচটার মধ্যে শিক্ষার্থীদের আবাসিক ছাত্রাবাস ত্যাগের নিদের্শ দেওয়া হয়। এর কিছুদিন পর এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি  খুলে পড়াশোনার পরিবেশ স্বাভাবিক হলেও দীর্ঘ সাড়ে ছয় বছর ধরে বন্ধই রয়েছে ইনস্টিটিউটের তিনটি ছাত্রাবাস। ফলে অবকাঠামো থাকার পরেও আবাসন সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন নগরীর বাইরে থেকে আসা শিক্ষার্থীরা। এতে করে চরম ভোগন্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের। এ অবস্থায় দ্রুত ছাত্রাবাসগুলো খুলে দেওয়ার জোর দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে র্দীঘদিন ছাত্রাবাস বন্ধ থাকায় তা বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে সংস্কার না হওয়ায় ছাত্রাবাসগুলো খুলে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে ছাত্রাবাস সংস্কার করে তা খুলে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ছাত্রলীগ ও ছাত্রমৈত্রীর দ্বন্দ্ব এখ...

ডিপ্লোমা কি অনার্স এর সমমান?

না ডিপ্লোমা অনার্সের সমমান নয়। বাংলাদেশের শিক্ষার মান কোনটা কি দেখতে নিচের ছবিটা দেখুন

ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াররা কিভাবে শাজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এ চান্স পেতে চান ?

শাহাজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের বেস্ট বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এর মধ্যে একটি । এখানকার কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (CSE) ফ্যাকাল্টি এবং ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (EEE) এর ফ্যাকাল্টি এর ডিমান্ড বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (BUET) এর পরপরই । কেননা এই দুইটি ফ্যাকাল্টি বিশেষত CSE ফ্যাকাল্টি এর দায়িত্বে রয়েছেন আমাদের সকলের অতি পরিচিত মুখ আর আমাদের শ্রদ্ধাভাজন " ডঃ মুহাম্মদ জাফর ইকবাল স্যার" । এই কথা শুনে ডিপ্লোমা স্টুডেন্ট কিংবা ডুয়েটিয়ান রা যত চিল্লাচিল্লি করুক না কেন শেষ পর্যন্ত যখন জব মার্কেট কে এনালাইসিস করবে সকলে এবং সেই সাথে যখন দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তিবিদ দের পরামর্শ নিবেন তখনই বুঝতে পারবেন কথাটি কতটুকু সত্য । যাই হউক এবার আসি মুল বক্তব্য এ । একথা সত্য যে যে ডুয়েট এর জন্য প্রস্তুতি নেওয়া ব্যাতিরখে কেউ কখনও শাহাজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এ ভর্তির আশা কোনভাবেই করতে পারে না ।