সিলেট পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের প্রতিভা ছাত্রাবাস বন্ধ হয়ে গেছে। শিক্ষক স্বল্পতাসহ প্রতিষ্ঠানটি নানা সমস্যায় জর্জরিত। আবাসন সমস্যা প্রকট আকার ধারন করেছে। বসবাসের উপযোগী না থাকায় প্রতিভা ছাত্রাবাস বন্ধ হওয়ার পর পরিত্যাক্ত অবস্থায় রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকার কারনে ছাত্রাবাসটির চারদিকে গজিয়ে উঠেছে বিভিন্ন প্রকার গাছসহ আগাছা। অযত্ন অবহেলায় পড়ে থাকায় নষ্ট হচ্ছে কয়েক কোটি টাকার মূল্যবান সম্পদ। কর্তৃপক্ষের এ ব্যাপারে কোন গরজ নেই।
পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের দু’টি আবাসিক হলের মধ্যে সুরমা ছাত্রাবাসটি সচল থাকলেও রয়েছে নানা সমস্যা। সুরমা ছাত্রাবাস অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে চলছে। প্রায় চার বছর আগে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ ও শিবিরের মধ্যে সংর্ষের পর প্রতিভা হোষ্টেলের আবাসিক ছাত্ররা হল ছেড়ে চলে যায়। পরে ছাত্রলীগ দখলে নিলেও পরিবেশ না থাকার কারনে তারাও হল ছেড়ে দেয়। শিক্ষার্থীদের আবাসিক ব্যাবস্থা না থাকার কারনে নানা ঝামেলায় পড়তে হয়। পড়ালেখা করতে এসে প্রথমেই আবাসিক সমস্যার মুখোমুখি। এছাড়া দির্ঘ দিন ধরে বিপুল সংখ্যক শিক্ষকের পদ শুন্য থাকায় ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। আধুনিক শিক্ষার সাথে সমন্বয়হীনতা, যুগোপযোগী যন্ত্রপাতির অভাব, যানবাহন সমস্যা, আসন সংকট ও বহিরাগতদের উৎপাতসহ সীমাহীন সমস্যা এই প্রতিষ্ঠানে। দীর্ঘদিন থেকে এসব সমস্যা বিদ্যমান থাকলেও সংশ্লিষ্টরা নির্বিকার। অর্ধশতাধিক বছরের এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৮টি অনুষদের মধ্যে ৭ টিতে আসন বাড়ানো হয়নি দীর্ঘ ৪৪ বছরেও। এদিকে চাহিদার তুলনায় আসন সংখ্যা অপ্রতুল হওয়ায় স্থানীয় শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছেন। বর্তমানে ননটেক, সিভিল, মেকানিক্যাল, পাওয়ার, ইলেকট্রিক্যাল, কম্পিউটার, ইলেকট্রনিক্র, ইলেকট্রোমেটিক্যাল টেকনোলজিসহ মোট ৮টি ডির্পাটমেন্টে আড়াই হাজার ছাত্র/ছাত্রী অধ্যয়নরত। নগরীর উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া সুরমা নদীর দক্ষিণ পাড়ে খোজারখলা ও বরইকান্দি মৌজার মধ্যবর্তী স্থানে ২০ একর ৩৪ পয়েন্ট ভূমির উপর স্থাপিত হয় পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৬১জন শিক্ষকের মধ্যে খালি ১৭টি। কর্মকর্তা কর্মচারীদের ৭৯টি পদের মধ্যে শূন্য ২৪টি। চীফ ইন্সট্রাক্টরের ৮টি পদের মধ্যে ৪টি অনুষদে চীফ ইন্সট্রাক্টর নেই। শিক্ষকদের মধ্যে বিভিন্ন অনুষদে ১৩ টি পদ খালি। কর্মকর্তা কর্মচারীদের ৭৯টি পদের মধ্যে ২৪টি পদই শুন্য। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, পর্যাপ্ত পরিমান শিক্ষক না থাকায় শিক্ষা কার্যক্রম চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। মরিচিকা ধরেছে প্রকৌশলী হওয়ার স্বপ্নে। শিক্ষক নেই, ডেমন্সট্রেটর নেই, ব্যবহারিক ক্লাশ হয়না ও পিষ্টন, গ্রাউন্ডার, বয়লারের অভাব এবং কম্পিউটার হার্ডওয়ার নেই বললেই চলে। দীর্ঘদিন ধরে লেদ মেশিন, শেফার মেশিন ও পাওয়ার সাপ¬াই জেনারেটর নষ্ট। পর্যাপ্ত কর্মকর্তা কর্মচারি না থাকায় অফিসিয়াল কাজকর্মেও বিঘœ ঘটছে। ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের উৎপাত ও অবৈধ কার্যকলাপের অভিযোগও রয়েছে। একাডেমিক ভবনের সামনে লাগোয়া একটি বিশাল পুকুর। বহিরাগত নারী-পুরুষ দলবেঁধে পুকুরে গোসল করে। কোন ভাবেই বহিরাগতদের ঠেকাতে পারছেনা কর্তৃপক্ষ। সুযোগ পেলে টয়লেটের কাজটাও ওখানেই সেরে নেয় কেউ কেউ। ফলে নষ্ট হচ্ছে শিক্ষার পরিবেশ।
আপনাদের পলিটেকনিকের সমস্যা আমাদের এই ইমেলে জানানঃ rony.hosen6@gmail.com
আপনাদের পলিটেকনিকের সমস্যা আমাদের এই ইমেলে জানানঃ rony.hosen6@gmail.com
মন্তব্যসমূহ