কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কারিগরি শিক্ষার বিকল্প নেই,বাকাশিবো ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ড. মো. আবদুল হক তালুকদার
বাংলাদেশের উন্নয়নে কারিগরি শিক্ষার বিকল্প নেই। বর্তমান সরকারের ঘোষিত ২০২১ সালে কারিগরি শিক্ষার হার ৮ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে উন্নীত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের ৯৫ ভাগই বেসরকারি, আর মাত্র ৫ ভাগ সরকারি। এই বৃহত্ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার মানোন্নয়নে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমরা কথা বলেছি বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ড. মো. আবদুল হক তালুকদারের সাথে। প্রায় ২৩ বছরের বেশি সময় তিনি শিক্ষকতা পেশায় নিযুক্ত। আট বছর ধরে বাংলাদেশে কারিগরি শিক্ষা, কারিগরি শিক্ষার প্রসার, তদারকিসহ নীতিনির্ধারণের কাজ করে যাচ্ছেন। কারিগরি শিক্ষায় বাংলাদেশের ভবিষ্যত্, এ দেশের তরুণ-তরুণীদের ভবিষ্যত্ এবং এই শিক্ষার ক্যারিয়ার নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন তিনি। আলোচনায় কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের নানা দিক উঠে এসছে, পাশাপাশি এই শিক্ষা ব্যবস্থা তরুণ-তরুণীদের জন্য কতটুকু সম্ভাবনাময় তাও শেয়ার করেছেন তিনি। লিখেছেন মোজাহেদুল
গরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষায় উন্নত দেশগুলো অনেক এগিয়ে গেছে। সেই তুলনায় বলা যায়, বাংলাদেশ পিছিয়ে রয়েছে বহু দিক থেকেই। ২০০৯ সালের আগে এ শিক্ষাব্যবস্থার তেমন গুরুত্ব ছিল না। তবে জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০-এ বাংলাদেশের কারিগরি শিক্ষাব্যবস্থা বেশ গুরুত্ব পেয়েছে। বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে—ডিপ্লোমা, ভোকেশনাল ও জাতীয় দক্ষতার মান বেসিকসহ বিভিন্ন শিক্ষাক্রমে ২০০৮ সালের পর প্রায় দুই লাখ শিক্ষার্থী বেড়েছে, প্রতিষ্ঠান বেড়েছে দুই হাজারেরও বেশি। এই বৃদ্ধির কারণে কারিগরিতে মোট শিক্ষার্থীর হার প্রায় ৮ শতাংশে পৌঁছেছে। বর্তমানে সারাদেশে ডিপ্লোমা পর্যায়ে ৫১টি সরকারি প্রতিষ্ঠান ও ৩৭৪টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এইচএসসি ভোকেশনাল শিক্ষা প্রদান করছে ১ হাজার ৭০০ বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও ৬৮টি সরকারি প্রতিষ্ঠান। এসএসসি ভোকেশনালের ক্ষেত্রে ২ হাজার ৩০২টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও ১৪১টি সরকারি প্রতিষ্ঠান শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। মানসম্মত বা গুণগত শিক্ষা নিয়ে অবশ্য কারিগরিতে শিক্ষক সঙ্কট, ল্যাব সঙ্কট রয়েছে। একইসাথে অবকাঠামো সঙ্কট তো রয়েছেই। যেহেতু কারিগরি শিক্ষা ব্যবহারিক জ্ঞানভিত্তিক, তাই এই শিক্ষার গুণগতমান নিশ্চিত করতে হলে অবকাঠামো, ল্যাব নির্মাণ, মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমসহ পর্যাপ্ত বিনিয়োগ বাড়ানো প্রয়োজন। এই শিক্ষায় যত বেশি বিনিয়োগ হবে তার সুফলও তত বেশি আসবে। প্রতিনিয়ত করিগরি শিক্ষায় শিক্ষার্থীর হার বৃদ্ধির কারণ সমূহ প্রসঙ্গে ড. মো. আবদুল হক তালুকদার জানান, বর্তমানে জেনারেল লাইনে পড়াশোনা শেষ করে অনেক যুবকই বেকার থাকছে। কিন্তু কারিগরি শিক্ষা নিয়ে কেউ বেকার থাকে না। শুধু চাকরি নয়, তারা নিজেরা একটি ল্যাব বা ওয়ার্কশপ করেও কর্মসংস্থানের সুযোগ করতে পারে। বলা যায়, কর্মসংস্থানের সুযোগ থাকায় কারিগরি শিক্ষার প্রতি শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বাড়ছে। এ ছাড়া কারিগরি শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে জনশক্তিকে কর্মমুখী করে তোলা। এই শিক্ষাব্যবস্থায় হাতে-কলমে প্রায়োগিক শিক্ষা দেওয়া হয়। বর্তমান প্রযুক্তির বিশ্বে প্রায়োগিক জ্ঞানে শিক্ষার্থীরা আগ্রহী হয়ে উঠছে।
আবদুল হক বলেন, ‘কারিগরি শিক্ষা নিয়ে উন্নত দেশগুলো আজ থেকে ১০০ বছর আগে কর্মকাণ্ড শুরু করেছে। আমাদের দেশে কারিগরি শিক্ষা নিয়ে কর্মকাণ্ড ৬০ বছর আগে শুরু হলেও ২০১০ সালের জাতীয় শিক্ষানীতির আগে এ শিক্ষাব্যবস্থার তেমন গুরুত্ব ছিল না। এই গুরুত্ব না দেওয়ার কারণে আমাদের দেশ এই শিক্ষা ব্যবস্থায় পিছিয়ে পড়ে। কিন্তু কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষায় জোর দেওয়ার কারণে বাংলাদেশের চেয়ে ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়া অনেক এগিয়ে গেছে। তাদের জিডিপির হারও আমাদের চেয়ে অনেক বেশি। অথচ ১৯৭০ সালে এ দেশগুলোর জিডিপির হার ছিল আমাদের প্রায় কাছাকাছি।’
মানবসম্পদ তথা জাতীয় উন্নয়নে এই শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা ও সুযোগসমূহ প্রসঙ্গে ব্যখ্যা করে তিনি বলেন, ‘কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষাকে বর্তমানে জীবিকা অর্জনের মাধ্যম হিসেবে অভিহিত করা হয়। শিক্ষাবোর্ডের মতে, বিপুল জনসংখ্যাকে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে কারিগরি শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। কারণ কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত একজন মানুষের যেমন একদিকে অনেক বেশি চাকরির সুযোগ থাকে, আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগও থাকে। কারিগরি শিক্ষার ওপর দেশের উন্নতিও নির্ভর করছে। কারণ এ শিক্ষা মানুষকে সহজে আত্মনির্ভরশীল করে তোলে, জনসংখ্যাকে জনসম্পদে রূপান্তরিত করে, দেশ-সমাজ ও জাতিকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করে।’
২০২১ সালে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে বর্তমান সরকার যে ভিশন-২০২১ নির্ধারণ করছে তার জন্যও কারিগরি শিক্ষাকে গুরুত্ব দিতে হবে বলে মনে করেন আবদুল হক তালুকদার। এ প্রসঙ্গে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ ও কর্মসূচির প্রশংসা করেন তিনি। পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগের সহায়তার গুদেশের উন্নয়নে কারিগরি শিক্ষার বিকল্প নেই। বর্তমান সরকারের ঘোষিত ২০২১ সালে কারিগরি শিক্ষার হার ৮ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশে উন্নীত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের ৯৫ ভাগই বেসরকারি, আর মাত্র ৫ ভাগ সরকারি। এই বৃহত্ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার মানোন্নয়নে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমরা কথা বলেছি বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ড. মো. আবদুল হক তালুকদারের সাথে। প্রায় ২৩ বছরের বেশি সময় তিনি শিক্ষকতা পেশায় নিযুক্ত। আট বছর ধরে বাংলাদেশে কারিগরি শিক্ষা, কারিগরি শিক্ষার প্রসার, তদারকিসহ নীতিনির্ধারণের কাজ করে যাচ্ছেন। কারিগরি শিক্ষায় বাংলাদেশের ভবিষ্যত্, এ দেশের তরুণ-তরুণীদের ভবিষ্যত্ এবং এই শিক্ষার ক্যারিয়ার নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন তিনি। আলোচনায় কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের নানা দিক উঠে এসছে, পাশাপাশি এই শিক্ষা ব্যবস্থা তরুণ-তরুণীদের জন্য কতটুকু সম্ভাবনাময় তাও শেয়ার করেছেন তিনি। লিখেছেন মোজাহেদুল ইসলাম
কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষায় উন্নত দেশগুলো অনেক এগিয়ে গেছে। সেই তুলনায় বলা যায়, বাংলাদেশ পিছিয়ে রয়েছে বহু দিক থেকেই। ২০০৯ সালের আগে এ শিক্ষাব্যবস্থার তেমন গুরুত্ব ছিল না। তবে জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০-এ বাংলাদেশের কারিগরি শিক্ষাব্যবস্থা বেশ গুরুত্ব পেয়েছে। বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে—ডিপ্লোমা, ভোকেশনাল ও জাতীয় দক্ষতার মান বেসিকসহ বিভিন্ন শিক্ষাক্রমে ২০০৮ সালের পর প্রায় দুই লাখ শিক্ষার্থী বেড়েছে, প্রতিষ্ঠান বেড়েছে দুই হাজারেরও বেশি। এই বৃদ্ধির কারণে কারিগরিতে মোট শিক্ষার্থীর হার প্রায় ৮ শতাংশে পৌঁছেছে। বর্তমানে সারাদেশে ডিপ্লোমা পর্যায়ে ৫১টি সরকারি প্রতিষ্ঠান ও ৩৭৪টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এইচএসসি ভোকেশনাল শিক্ষা প্রদান করছে ১ হাজার ৭০০ বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও ৬৮টি সরকারি প্রতিষ্ঠান। এসএসসি ভোকেশনালের ক্ষেত্রে ২ হাজার ৩০২টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও ১৪১টি সরকারি প্রতিষ্ঠান শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। মানসম্মত বা গুণগত শিক্ষা নিয়ে অবশ্য কারিগরিতে শিক্ষক সঙ্কট, ল্যাব সঙ্কট রয়েছে। একইসাথে অবকাঠামো সঙ্কট তো রয়েছেই। যেহেতু কারিগরি শিক্ষা ব্যবহারিক জ্ঞানভিত্তিক, তাই এই শিক্ষার গুণগতমান নিশ্চিত করতে হলে অবকাঠামো, ল্যাব নির্মাণ, মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমসহ পর্যাপ্ত বিনিয়োগ বাড়ানো প্রয়োজন। এই শিক্ষায় যত বেশি বিনিয়োগ হবে তার সুফলও তত বেশি আসবে। প্রতিনিয়ত করিগরি শিক্ষায় শিক্ষার্থীর হার বৃদ্ধির কারণ সমূহ প্রসঙ্গে ড. মো. আবদুল হক তালুকদার জানান, বর্তমানে জেনারেল লাইনে পড়াশোনা শেষ করে অনেক যুবকই বেকার থাকছে। কিন্তু কারিগরি শিক্ষা নিয়ে কেউ বেকার থাকে না। শুধু চাকরি নয়, তারা নিজেরা একটি ল্যাব বা ওয়ার্কশপ করেও কর্মসংস্থানের সুযোগ করতে পারে। বলা যায়, কর্মসংস্থানের সুযোগ থাকায় কারিগরি শিক্ষার প্রতি শিক্ষার্থীদের আগ্রহ বাড়ছে। এ ছাড়া কারিগরি শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে জনশক্তিকে কর্মমুখী করে তোলা। এই শিক্ষাব্যবস্থায় হাতে-কলমে প্রায়োগিক শিক্ষা দেওয়া হয়। বর্তমান প্রযুক্তির বিশ্বে প্রায়োগিক জ্ঞানে শিক্ষার্থীরা আগ্রহী হয়ে উঠছে।
আবদুল হক বলেন, ‘কারিগরি শিক্ষা নিয়ে উন্নত দেশগুলো আজ থেকে ১০০ বছর আগে কর্মকাণ্ড শুরু করেছে। আমাদের দেশে কারিগরি শিক্ষা নিয়ে কর্মকাণ্ড ৬০ বছর আগে শুরু হলেও ২০১০ সালের জাতীয় শিক্ষানীতির আগে এ শিক্ষাব্যবস্থার তেমন গুরুত্ব ছিল না। এই গুরুত্ব না দেওয়ার কারণে আমাদের দেশ এই শিক্ষা ব্যবস্থায় পিছিয়ে পড়ে। কিন্তু কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষায় জোর দেওয়ার কারণে বাংলাদেশের চেয়ে ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়া অনেক এগিয়ে গেছে। তাদের জিডিপির হারও আমাদের চেয়ে অনেক বেশি। অথচ ১৯৭০ সালে এ দেশগুলোর জিডিপির হার ছিল আমাদের প্রায় কাছাকাছি।’
মানবসম্পদ তথা জাতীয় উন্নয়নে এই শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা ও সুযোগসমূহ প্রসঙ্গে ব্যখ্যা করে তিনি বলেন, ‘কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষাকে বর্তমানে জীবিকা অর্জনের মাধ্যম হিসেবে অভিহিত করা হয়। শিক্ষাবোর্ডের মতে, বিপুল জনসংখ্যাকে দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে কারিগরি শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। কারণ কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত একজন মানুষের যেমন একদিকে অনেক বেশি চাকরির সুযোগ থাকে, আত্মকর্মসংস্থানের সুযোগও থাকে। কারিগরি শিক্ষার ওপর দেশের উন্নতিও নির্ভর করছে। কারণ এ শিক্ষা মানুষকে সহজে আত্মনির্ভরশীল করে তোলে, জনসংখ্যাকে জনসম্পদে রূপান্তরিত করে, দেশ-সমাজ ও জাতিকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করে।’
২০২১ সালে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে বর্তমান সরকার যে ভিশন-২০২১ নির্ধারণ করছে তার জন্যও কারিগরি শিক্ষাকে গুরুত্ব দিতে হবে বলে মনে করেন আবদুল হক তালুকদার। এ প্রসঙ্গে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ ও কর্মসূচির প্রশংসা করেন তিনি। পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগের সহায়তার গু রুত্বের কথাও বলেন তিনি। তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার ২০২১ সাল নাগাদ মাধ্যমিক স্তরে কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষায় ২০ শতাংশ শিক্ষার্থীর বৃদ্ধির পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ও আইসিটি শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করেছে। কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের জন্য বিশ তলা ভবন নির্মাণসহ বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে। কারিগরি শিক্ষার্থীদের সহায়ক জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন নীতি-২০১১ সালে প্রণয়ন করেছে। বিভিন্ন উন্নয়ন সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে গুণগত শিক্ষা নিশ্চিতে পাঁচটি প্রকল্প চালু হয়েছে। গতানুগতিকের পরিবর্তে দক্ষতাভিত্তিক প্রশিক্ষণ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। শিক্ষানীতিতে কারিগরি শিক্ষার উন্নয়নে বিশেষ পদক্ষেপ নিয়েছে। এ ছাড়াও শিক্ষানীতিতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কারিগরি শিক্ষার বিভিন্ন বিষয় অন্তর্ভুক্ত করেছে। একটি কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয় চালু করারও চিন্তা করেছে। বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতায় কারিগরি শিক্ষা খাতে দেড় লক্ষাধিক শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তি প্রদানের প্রকল্প হাতে নিয়েছে। বেসরকারি ৩০টি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য ৫৩৪ কোটি টাকার প্রজেক্ট গ্রহণ করেছে। এসব প্রকল্প ও উদ্যোগ এখনও চলমান। এসব উদ্যোগের ফল আসতে একটু সময় লাগবে। তবে কারিগরি শিক্ষার বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর পৃষ্ঠপোষকতা দরকার। কারণ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোই কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষার অনেকখানি প্রতিনিধিত্ব করছে।’
সারাদেশের কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো তদারকসহ যথাযথ শিক্ষা নিশ্চিতে কারিগরি বোর্ডের ভূমিকাসমূহ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ড ১৯৫৪ সালে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ১৯৬৭ সালে ১নং সংসদীয় কারিগরি শিক্ষা আইন বলে এটি পূর্ণ রূপ লাভ করে। বর্তমানে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের অধীনে ৪৯টি সরকারি পলিটেকনিক, অর্ধশতাধিক প্রাইভেট পলিটেকনিক, ব্যবসা শিক্ষাক্রম ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান, সরকারি ভোকেশনাল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং বেশকিছু টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার (টিটিসি) রয়েছে। কারিগরি শিক্ষার প্রতি মানুষের আগ্রহ বৃদ্ধির ফলে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ড চালু করছে নতুন শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচি। এ ছাড়া যথাসময়ে সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা আয়োজনসহ প্রতিষ্ঠানগুলোর গুণগতমান নিশ্চিতে কাজ করছে। তবে সরকারি বরাদ্দ ও সুযোগ-সুবিধা পেলে এই ভূমিকা আরও জোরদার করা সম্ভব হবে।’
কারিগরি শিক্ষার আরও প্রসার এবং উন্নয়নের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপসমূহ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কারিগরি শিক্ষা দক্ষ জনবল তৈরির মূল ক্ষেত্র। তাই উত্পাদনমুখী ও জীবনভিত্তিক এ শিক্ষার প্রতি শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া উচিত। এ ছাড়া কারিগরি শিক্ষাব্যবস্থায় গুণগত পরিবর্তন আনতে নানা পদক্ষেপ নিতে হবে। কারিগরি শিক্ষাসহ শিক্ষায় বরাদ্দ বাড়াতে হবে। বেসরকারি কারিগরি প্রতিষ্ঠানগুলোকে অর্থায়ন, এমপিওভুক্তির আওতায় আনতে হবে। প্রতিবছর বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার কারিগরি শিক্ষার্থীদের পাসের হার, জিপিএ ৫ প্রাপ্তি সব বাড়ছে। তাই এ অগ্রগতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে এবং অবকাঠামো, শিক্ষক, ল্যাব সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০-এর যথাযথ বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবি।’
ছবি মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর
মন্তব্যসমূহ