২৩টি বিশ্বমানের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট স্থাপনের সিদ্ধান্ত ১০০ উপজেলায় কারিগরি স্কুল প্রতিষ্ঠায় অনুমোদন
কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন দক্ষ জনশক্তি গড়ে দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার দ্রুত উন্নতি ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সরকার শিগগির দেশে ২৩টি বিশ্বমানের নতুন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট স্থাপন করবে। এ ছাড়া চলতি অর্থবছরে দেশের প্রতি উপজেলায় একটি করে কারিগরি স্কুল প্রতিষ্ঠা করা হবে। এরই মধ্যে ১০০ উপজেলায় কারিগরি স্কুল প্রতিষ্ঠার প্রকল্পে সরকার চ‚ড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে এবং তার বাস্তবায়ন কাজও শুরু হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্রটি থেকে বলা হয়েছে, বিদেশে বর্তমানে দক্ষ জনশক্তির চাহিদা বেড়েছে। দেশেও বেড়েছে দক্ষ জনশক্তির চাহিদা। এ প্রেক্ষাপটে দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার দ্রুত উন্নয়নে কারিগরি ও প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই। বর্তমান দেশে ৪৯টি সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে দু’লক্ষাধিক শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে।
নতুন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট স্থাপন বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তোলার যে উদ্যোগ সরকার নিয়েছে তার ইতিবাচক ফল এরই মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। এখন বিদেশে আগের চেয়ে বেশি দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি করা সম্ভব হচ্ছে। ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার দায়িত্ব গ্রহণের সময় দেশে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষার্থী ভর্তি মোট শিক্ষার্থীর ১ শতাংশেরও কম ছিল। এখন দেশের মোট শিক্ষার্থীর ১০ শতাংশ কারিগরি শিক্ষার্থী। সরকার ২০২০ সাল নাগাদ কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষার্থী ভর্তির হার ২০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। শিক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোতে এখন আরও নতুন যেসব বিভাগ খোলা হবে তার মধ্যে রয়েছে সোলার টেকনোলজি, মিডিয়া, প্লাস্টিক শিল্প, পর্যটন, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ প্রভৃতি। বর্তমানে কারিগরি ইনস্টিটিউটসমূহে লেখাপড়ার মান ভালো, এবারের এইচএসসি পরীক্ষায় নানা প্রতিক‚লতার মধ্যেও কারিগরি শিক্ষাবোর্ডে পাসের হার ৮৫ দশমিক ৫৮ শতাংশ। মন্ত্রী তরুণ প্রজš§কে আরও বেশি করে কারিগরি শিক্ষা গ্রহণের আহŸান জানান।সূত্রটি থেকে বলা হয়েছে, বিদেশে বর্তমানে দক্ষ জনশক্তির চাহিদা বেড়েছে। দেশেও বেড়েছে দক্ষ জনশক্তির চাহিদা। এ প্রেক্ষাপটে দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার দ্রুত উন্নয়নে কারিগরি ও প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই। বর্তমান দেশে ৪৯টি সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে দু’লক্ষাধিক শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে।
এদিকে সরকার বস্ত্রশিল্পের কাক্সিক্ষত উন্নয়নে জরুরি ভিত্তিতে দেশে নতুন করে আরও দুটি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, ৭টি টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট এবং ২৪টি টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট স্থাপন করতে যাচ্ছে। এসব কলেজ, ইনস্টিটিউট ও ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট স্থাপনের জন্য এবারের ২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেটে প্রয়োজনীয় বিশেষ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্রটি থেকে বলা হয়েছে, বস্ত্র খাতের এক্সিকিউটিভ পর্যায়ে দক্ষ বস্ত্র প্রকৌশলী সরবরাহ করার লক্ষ্যে রংপুরের পীরগঞ্জ ও জামালপুরে স্থাপন করা হচ্ছে দুটি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ। যশোর, নেত্রকোনা, লালমনিরহাট, চাঁদপুরের শাহরাস্তি, মাদারীপুরের রাজৈর, গাইবান্ধা ও নওগাঁর মান্দায় স্থাপন করা হবে ৭টি টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট। বস্ত্রশিল্পের ফ্লোর লেভেলে আরও দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টি এবং দেশে বেকার যুবসমাজের আÍকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে পঞ্চগড়, লালমনিরহাট, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, জয়পুরহাট, মাগুরা, নড়াইল, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, চাঁদপুর, ফেনী, বরিশাল, ভোলা, সাতক্ষীরা, সিলেট, হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সুনামগঞ্জ, শেরপুর, নেত্রকোনা, ঢাকা, রাজবাড়ী ও শরিয়তপুর জেলায় একটি করে মোট ২৪টি টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট স্থাপন করা হবে।
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী বলেছেন, বর্তমানে দেশে বস্ত্র প্রকৌশলী ও বস্ত্র প্রযুক্তিবিদের চাহিদা প্রায় দেড় লাখ হলেও আছে প্রায় ৫০ হাজার। তাই বিদেশ থেকে বিপুল সংখ্যক বস্ত্র প্রকৌশলী ও বস্ত্র প্রযুক্তিবিদ আনতে হচ্ছে। দেশীয় বস্ত্র প্রকৌশলী ও বস্ত্র প্রযুক্তিবিদের এ শূন্যতা পূরণের লক্ষ্যে শিগগিরই আরও টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট ও টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে।
মন্তব্যসমূহ