সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে কিছু ভুল ধারণা


যারা জেনারেল লাইনে পড়ে তাদের অনেকের ই ভুল ধারণা আছে ডিপ্লোমা নিয়ে। অনেকেতো ডিপ্লোমা নাম শুনলেই কেমন যেন ক্ষেপে উঠে!
যেন কোন এক কালে ডিপ্লোমা পড়ুয়া কেউ তার বোনকে নিয়ে ভেগে গেছিল।
কোন এক বুয়েটের ছাত্র তো রেগেমেগে বললো “ওরা তো আমাদের চাকর।”
কতটা ঘৃণা থাকলে এমন কথা মুখে আনে?
অবশ্য এর পিছনে কিছুটা কারণ আছে বই কি। যেমনঃ একজন বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার যেই কাজে হাত দিতে ডাবল টাকা নেই সেই একই কাজটা ডিপ্লোমা ইঞ্জিয়ার আল্লাহর রহমত মনে করে অর্ধেক টাকায় করে দেয়। তো এমন ক্ষেত্রে মালিক নিজের টাকা বাঁচানোকেই বংশের গরীমা ভাবে। এমন করে চলার ফলে প্রচন্ড মেধাবী বুয়েটিয়ান কিংবা রুয়েটিয়ানের তো জীদ আসবেই। কিন্ত তাই বলে কি কাউকে ছোট করা উচিৎ?
এটা মনে রাখা উচিৎ তার যোগ্যতা আছে বলেই সে করছে।
ক্লিয়ার করে নেই।
একজন রিক্সাওয়ালা যে নিরক্ষর কিংবা হালকা শিক্ষিত হবে এতে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। তেমনি একজন ইন্টার পাশ শিক্ষাগত যোগ্যতা দিয়ে রিক্সা ওয়ালার চেয়ে এগিয়ে। আবার একজন অনার্স পাশ ইন্টার পাশের চেয়ে এগিয়ে এটা দ্রুব সত্য। এখন একজন অনার্স পাশ যদি রেগেমেগে বলে “তুই তো ইন্টার পাস। এটা কেমন যোগ্যতা?”
অই মাথামোটা অনার্স পাশকে তবে বলতে হয়,”নিজের চেয়ে কম সম্মানের কাউকে অপমান করা এ কেমন শিক্ষা বা যোগ্যতা?”
শিশু জিয়াদের কথা কি ভুলে গেছেন? আপনারা অতি মেধাবী বুয়েট কুয়েট রুয়েটের শিক্ষার্থীরা যখন আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে ব্যর্থ হয়ে ঘোষণা দিলেন এখানে শিশু থাকা অসম্ভব ঠিক তার পরপরই একজন মেকানিক্যাল পড়ুয়া পলিটেকনিক ছাত্র ভাংগাচুরা তার মার জোড়া লাগিয়ে বানালো এমন যন্ত্র যা দেখে সেই গাম্ভীর্য দের ও মাথা নষ্ট হয়ে গেছিলো। বের হয়ে এলো শিশু জিয়াদ।
উদাহরণ টা এ কারণেই দিলাম যাতে বুঝতে পারেন যোগ্যতা আর মেধা থাকলে বুয়েট কুয়েটে পড়া লাগেনা।
আপনাদের আরেকটা মাথা মোটা ধারণা হচ্ছে পলিটেকনিক এ কিছুই পড়ালেখা হয় না।
উত্তর টা ঠিক শিশু জিয়াদের মতো। যখন খুঁজে তাকে পাওয়া গেল না অমনি ঘোষণা এলো “ওখানে কোন শিশু নেই!”
নেই বললেই কি নেই হয়ে যায়? তেমনি আপনারা ডিপ্লোমা লাইনে পড়েন নি বলেই মুখ ভেটকি দিয়ে বলেন,”ওখানে কি পড়াশোনা হয়?”
নাইস জোক ব্রো।
চার বছরে আমাদের ডিপ্লোমা লাইনে প্রায় ৬০ এর মতো বই পড়ে ওগুলোতে পাশ করে, ব্যবহারিকে পাশ করে ভালো একটা পয়েন্ট তুলে তার পরেই না ডিপ্লোমা পাশ করতে হয়।
প্রতিদিন অতশত জবশীট, সেসনাল খাতা, ক্লাস টেস্ট, কুইক টেস্ট, শফ প্র্যাকটিস, ড্রয়িং ওগুলো ও নিশ্চয়ই আপনারা করে দিয়ে যান না?
তার এই অল্প কয়েক মাসে এতগুলো বই, ইঞ্জিন, যন্ত্রপাতি, ম্যাথ ব্লা ব্লা ওগুলো ও নিশ্চয়ই কোন কাজের আন্ডারে পড়েনা তাই না?
আরেকটা কথা না বলেও পারছিনা। ডিপ্লোমা এর পরে অধিকাংশ ই আমরা বিএসসি করি। কিন্ত তারা মাথামোটারা দেখেনা বিএসসি করতে হলে তো আমাদের ডিপ্লোমা কমপ্লিট করা লাগবে নাকি?
কারিগরি লাইনকে আমাদের সরকার একটুও গুরুত্ব দেয় না। যেখানে বহির্বিশ্বে কারিগরী লাইনের ছাত্রদের এত কদর সেখানে আমাদের ডিপ্লোমা স্টুডেন্ট দের জন্য একমাত্র বিএসসি “ডুয়েট ” এ করা যায়। এর ফলে অনেক মেধা ঝরে যায়। টাকার অভাবে করতে পারেনা বিএসসি। অধিকাংশ ই পাড়ি জমায় বহির্বিশ্বে। তাদের কি দোষ? যেখানে জেনারেল লাইনের স্টুডেন্ট দের জন্য এতগুলো বিশ্ববিদ্যালয় সেখানে আমাদের কারিগরি লাইনের ছেলেদের জন্য? জাতির বিবেকের কাছে প্রশ্ন। প্রশ্ন নয় জিজ্ঞাসা!!
তো এই ছেলেগুলো বাইরের দেশে গিয়ে বিএসসি করে সেই দেশে ভালো সেলারি পেয়ে থেকে যায়। তো তার মেধা খাটাচ্ছে অন্য দেশের জন্য। দেশ কি পাচ্ছে? দেশ এভাবেই পলিটেকনিক স্টুডেন্ট দের খাটানো মেধা হারাচ্ছে।
এ দায় কি দেশ নিবে না? কেন আমাদের উপরে এত যুলুম? বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার আশায় ভর্তি হওয়া মধ্যবিত্ত ছেলেটা এক সময় বুঝে যায় দেশ তাকে উচ্চশিক্ষার সুযোগ দিবে না। তারপর স্বল্প সেলারীতে নিজের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলো নষ্ট করে আর ভাবে জেনারেল লাইনে পড়লেই ভালো ছিলো।
ভাই সম্মান দিতে শিখো সম্মান পাবে। তোমরা তোমাদের জন্য আমরা আমাদের জন্য।

মন্তব্যসমূহ

Abir বলেছেন…
thanks vai.
comment na kore parlam na onek sundor lekchen
নামহীন বলেছেন…
Thanks vaiya
http//www.tagorjoy.blogspot.com বলেছেন…
Akhon BSC jara porse Tara janene j tader akhon jara teacher ase tader o teacher selo Diploma holder ra
Unknown বলেছেন…
Great issues with my best regards.

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট: সাড়ে ৬ বছর ধরে বন্ধ ছাত্রাবাস, শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি

২০১০ সালের ৭ জানুয়ারি রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে সংঘর্ষে ছাত্রলীগের হামলায় নিহত হন ছাত্রমৈত্রীর রেজাওয়ানুল চৌধূরী সানি। এ ঘটনায় ক্যাম্পাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। ওই দিন বিকেল পাঁচটার মধ্যে শিক্ষার্থীদের আবাসিক ছাত্রাবাস ত্যাগের নিদের্শ দেওয়া হয়। এর কিছুদিন পর এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি  খুলে পড়াশোনার পরিবেশ স্বাভাবিক হলেও দীর্ঘ সাড়ে ছয় বছর ধরে বন্ধই রয়েছে ইনস্টিটিউটের তিনটি ছাত্রাবাস। ফলে অবকাঠামো থাকার পরেও আবাসন সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন নগরীর বাইরে থেকে আসা শিক্ষার্থীরা। এতে করে চরম ভোগন্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের। এ অবস্থায় দ্রুত ছাত্রাবাসগুলো খুলে দেওয়ার জোর দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে র্দীঘদিন ছাত্রাবাস বন্ধ থাকায় তা বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে সংস্কার না হওয়ায় ছাত্রাবাসগুলো খুলে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে ছাত্রাবাস সংস্কার করে তা খুলে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ছাত্রলীগ ও ছাত্রমৈত্রীর দ্বন্দ্ব এখ...

ডিপ্লোমা কি অনার্স এর সমমান?

না ডিপ্লোমা অনার্সের সমমান নয়। বাংলাদেশের শিক্ষার মান কোনটা কি দেখতে নিচের ছবিটা দেখুন

ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াররা কিভাবে শাজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এ চান্স পেতে চান ?

শাহাজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের বেস্ট বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এর মধ্যে একটি । এখানকার কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (CSE) ফ্যাকাল্টি এবং ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (EEE) এর ফ্যাকাল্টি এর ডিমান্ড বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (BUET) এর পরপরই । কেননা এই দুইটি ফ্যাকাল্টি বিশেষত CSE ফ্যাকাল্টি এর দায়িত্বে রয়েছেন আমাদের সকলের অতি পরিচিত মুখ আর আমাদের শ্রদ্ধাভাজন " ডঃ মুহাম্মদ জাফর ইকবাল স্যার" । এই কথা শুনে ডিপ্লোমা স্টুডেন্ট কিংবা ডুয়েটিয়ান রা যত চিল্লাচিল্লি করুক না কেন শেষ পর্যন্ত যখন জব মার্কেট কে এনালাইসিস করবে সকলে এবং সেই সাথে যখন দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তিবিদ দের পরামর্শ নিবেন তখনই বুঝতে পারবেন কথাটি কতটুকু সত্য । যাই হউক এবার আসি মুল বক্তব্য এ । একথা সত্য যে যে ডুয়েট এর জন্য প্রস্তুতি নেওয়া ব্যাতিরখে কেউ কখনও শাহাজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এ ভর্তির আশা কোনভাবেই করতে পারে না ।