সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

১৫ সন্ত্রাসীর কাছে জিম্মি যশোর পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট


উঠতি বয়সের কয়েকজন সন্ত্রাসীর হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছেন যশোর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের তিন হাজার শিক্ষার্থী। ওই সন্ত্রাসীরা দিনদুপুরে ক্যাম্পাসে ঢুকে ছিনতাই-অপহরণ করছে। গত এক বছরে শতাধিক মুঠোফোন ও টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে।
যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী তৌহিদুর রহমান ওরফে জুয়েলের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে ওই সন্ত্রাসীরা এসব কর্মকাণ্ড করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। অবশ্য জুয়েল এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
যশোর উপশহর পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মিরাজ মোসাদ্দেক প্রথম আলোকে বলেন, ‘পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের আশপাশের এলাকার ১২ থেকে ১৫ জনের উঠতি সন্ত্রাসী চক্র ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ছিনতাই করছে বলে আমাদের কাছে খবর আছে। পলিটেকনিকের কয়েকজন ছাত্রও ওই চক্রের সঙ্গে জড়িত বলে জানা গেছে। বেশির ভাগ সময় ছিনতাইকারীর নাম-পরিচয় জানা যায় না। যে কারণে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে সমস্যা হয়।’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ৭ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টার দিকে পলিটেকনিকের ক্যাম্পাস থেকে স্থানীয় আকাশ, আশিকসহ তিন তরুণ তড়িৎ কৌশল বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্র রাকিব আজাদকে ডেকে একটি ছাত্রাবাসে নিয়ে আটকে রেখে পরিবারের সদস্যদের কাছে পাঁচ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। রাকিবের পরিবার পুলিশের পরামর্শে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। আকাশ ও আশিক বেধড়ক পিটিয়ে রাকিবকে রাত আটটার দিকে শহরের ধর্মতলা এলাকায় ফেলে যায়।
পরদিন রাকিবের মা শারমিন সুলতানা তিনজনকে আসামি করে একটি অপহরণ মামলা করেন। এ ঘটনায় আকাশ ও আশিককে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের সময় তাদের পকেট থেকে গাঁজা সেবনের কলকেসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।
পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীরা জানান, স্থানীয় ১০ থেকে ১৫ বখাটে সন্ত্রাসী এই ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত। আর এদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেন ছাত্রলীগের নেতা জুয়েল। বখাটেরা নিজেদের এলাকার বড় ভাই হিসেবে পরিচয় দেয়। তারা ক্যাম্পাসে ছেলেমেয়েদের একসঙ্গে কথা বলতে দেখলেই লাঞ্ছিত করে এবং টাকাপয়সা ও মুঠোফোন ছিনিয়ে নেয়। হেনস্তা হওয়ার ভয়ে ছেলেমেয়েরা নিজেদের মধ্যে কথা বলা বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে।
অভিযোগ অস্বীকার করে জুয়েল বলেন, ‘আমরা একই এলাকায় বসবাস করি। এলাকার লোকজনের ভালো-মন্দ দেখি। এর মধ্যে কেউ যদি ছিনতাই করে, তাহলে কি তাকে প্রশ্রয় দেওয়া হলো।’
পলিটেকনিকের শিক্ষক সুলতান আহমেদ বলেন, নতুন পর্বের পাঠদান শুরুর সময়ে ছিনতাইয়ের প্রবণতা বাড়ে। গ্রাম থেকে নতুন ছেলেমেয়ে এলেই ছিনতাইকারীরা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে।
পলিটেকনিকের অধ্যক্ষ সামসুল আলম বলেন, পলিটেকনিকের কোনো ছাত্র ছিনতাই-অপহরণের সঙ্গে জড়িত কি না, তা খতিয়ে দেখার জন্য এবং বহিরাগতদের প্রতিরোধ করতে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট: সাড়ে ৬ বছর ধরে বন্ধ ছাত্রাবাস, শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি

২০১০ সালের ৭ জানুয়ারি রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে সংঘর্ষে ছাত্রলীগের হামলায় নিহত হন ছাত্রমৈত্রীর রেজাওয়ানুল চৌধূরী সানি। এ ঘটনায় ক্যাম্পাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। ওই দিন বিকেল পাঁচটার মধ্যে শিক্ষার্থীদের আবাসিক ছাত্রাবাস ত্যাগের নিদের্শ দেওয়া হয়। এর কিছুদিন পর এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি  খুলে পড়াশোনার পরিবেশ স্বাভাবিক হলেও দীর্ঘ সাড়ে ছয় বছর ধরে বন্ধই রয়েছে ইনস্টিটিউটের তিনটি ছাত্রাবাস। ফলে অবকাঠামো থাকার পরেও আবাসন সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন নগরীর বাইরে থেকে আসা শিক্ষার্থীরা। এতে করে চরম ভোগন্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের। এ অবস্থায় দ্রুত ছাত্রাবাসগুলো খুলে দেওয়ার জোর দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে র্দীঘদিন ছাত্রাবাস বন্ধ থাকায় তা বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে সংস্কার না হওয়ায় ছাত্রাবাসগুলো খুলে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে ছাত্রাবাস সংস্কার করে তা খুলে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ছাত্রলীগ ও ছাত্রমৈত্রীর দ্বন্দ্ব এখ...

ডিপ্লোমা কি অনার্স এর সমমান?

না ডিপ্লোমা অনার্সের সমমান নয়। বাংলাদেশের শিক্ষার মান কোনটা কি দেখতে নিচের ছবিটা দেখুন

ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াররা কিভাবে শাজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এ চান্স পেতে চান ?

শাহাজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের বেস্ট বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এর মধ্যে একটি । এখানকার কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (CSE) ফ্যাকাল্টি এবং ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (EEE) এর ফ্যাকাল্টি এর ডিমান্ড বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (BUET) এর পরপরই । কেননা এই দুইটি ফ্যাকাল্টি বিশেষত CSE ফ্যাকাল্টি এর দায়িত্বে রয়েছেন আমাদের সকলের অতি পরিচিত মুখ আর আমাদের শ্রদ্ধাভাজন " ডঃ মুহাম্মদ জাফর ইকবাল স্যার" । এই কথা শুনে ডিপ্লোমা স্টুডেন্ট কিংবা ডুয়েটিয়ান রা যত চিল্লাচিল্লি করুক না কেন শেষ পর্যন্ত যখন জব মার্কেট কে এনালাইসিস করবে সকলে এবং সেই সাথে যখন দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তিবিদ দের পরামর্শ নিবেন তখনই বুঝতে পারবেন কথাটি কতটুকু সত্য । যাই হউক এবার আসি মুল বক্তব্য এ । একথা সত্য যে যে ডুয়েট এর জন্য প্রস্তুতি নেওয়া ব্যাতিরখে কেউ কখনও শাহাজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এ ভর্তির আশা কোনভাবেই করতে পারে না ।