সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

জেনে নিন কারা ‘ডাক্তার’ ‘ইঞ্জিনিয়ার’ পদবী ব্যবহার করতে পারেন

ডাক্তার এবং ইঞ্জিনিয়ার দুটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও সম্মানজনক পদবী । যে কেউ যেকোন পর্যায়ের ডিগ্রী নিয়ে নামের আগে এই দুটি শব্দ বসাতে পারে না কিংবা নিজেকে ডাক্তার বা ইঞ্জিনিয়ার বলে পরিচয় দিতে পারে না । কিন্তু আমাদের দেশে যত্রতত্র এর ব্যবহার লক্ষ্য করা যায় । ডাক্তার পদবী তবু কিছুটা হলেও ডিগ্রীধারীরা ব্যবহার করেন কিন্তু ইঞ্জিনিয়ার তো গলির মোড়ের ওয়ার্কশপের ওয়েল্ডিং মিস্ত্রী কিংবা মোটর মেকানিক সবাই ব্যবহার করে ।
একজন ইঞ্জিনিয়ার বোধহয় নিজেকে ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে পরিচয় দিতে কিছুটা হলেও লজ্জা পাবেন। কিন্তু বিষয়টা এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে অনেকক্ষেত্রে একজন ইঞ্জিনিয়ারচাইলেও নিজের নামের আগে ইঞ্জিনিয়ার পদবী লাগাতে পারেন না ।

## আসুন প্রথমেই দেখে নিই কারা কারা নিজেকে ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে পরিচয় দিতে পারবেনঃ

১/ আইইবি (ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন বাংলাদেশ) স্বীকৃত সরকারী বা বেসরকারি বাংলাদেশি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রী থাকে ।
অথবা
২/ স্বীকৃত বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং এর সমমানের ডিগ্রী থাকে ।
অথবা
৩/ এএমআইই (সেকশন এ এবং বি) পাশ থাকে ।
উপরোক্ত ডিগ্রীধারীরা নিজেকে ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে পরিচয় দিতে পারবেন তবে নামের আগে ইঞ্জিনিয়ার পদবী ব্যবহার করতে পারবেন না ।

## আসুন দেখে নিই কারা কারা নিজের নামের আগে ইঞ্জিনিয়ার পদবী ব্যবহার করতে পারেন ঃ

১/ আইইবি স্বীকৃত সরকারী বা বেসরকারি বাংলাদেশি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রী থাকে এবং ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি)-র এসোসিয়েট মেম্বার হিসেবে নিবন্ধিত হন ।
অথবা
২/ স্বীকৃত বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং এর সমমানের ডিগ্রী থাকে এবং ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি)-র এসোসিয়েট মেম্বার হিসেবে নিবন্ধিত হন ।
অথবা
৩/ এএমআইই (সেকশন এ এবং বি) পাশ থাকে এবং ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি)-র এসোসিয়েট মেম্বার হিসেবে নিবন্ধিত হন ।এর বাইরে কোনও ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ডিগ্রীধারী কেউ নামের আগে কিংবা নিজেকে ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে পরিচয় দিতে পারবেন না । তবে কিছু ডিপ্লোমাধারী নিজেকে "ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার" হিসেবে পরিচয় দিতে পারবেন ।

## আসুন দেখে নিই তারা কারাঃ
১/ স্বীকৃত কোন পলিটেকনিক বা কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে প্রকৌশল বিষয়ে ডিপ্লোমা থাকে ।
এবং
২/ ইনস্টিটিউশন অফ ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ-থেকে নিবন্ধিত হন ।

এর বাইরে দুই মাস/ ছয় মাস/ ২ বছরের কোর্সকরে কেউ নিজেকে ইঞ্জিনিয়ার পরিচয় দিতে পারে না । এটা অন্যায় এবং দন্ডনীয় অপরাধ। সাথে সাথে এটা ইঞ্জিনিয়ার পদবী'র অপমান এবং মানুষকে ধোকা দেয়া ।

ঠিক তেমনি ভাবে ডাক্তার পদবীও ব্যবহার হচ্ছে দেদারসে । আসুন ডাক্তার পদবী ব্যবহারের কিছু আইন জেনে নিইঃ

বাংলাদেশ মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল কাউন্সিল অ্যাক্ট ২০১০(২০, ডিসেম্বর ২০১০-এ প্রকাশিত গেজেট) এর ধারা ২২(১) ও ২৯ (১) এর আওতায় গইইঝ/ইউঝ বাদে অন্য চিকিৎসকদের নামের আগে ডা. (ডাক্তার) পদবী ও নামের পরে ডিগ্রী ব্যবহার অপরাধ ।

** ন্যূনতম এমবিবিএস অথবা বিডিএস ডিগ্রিধারী ব্যতীত অন্য কেউ তাদের নামের পূর্বে ডাক্তার পদবী লিখতে পারবেন না। তাও আবার তাকে বিএমডিসি'র রেজিস্ট্রেশনভুক্ত হতে হবে। এর ব্যত্যয় ঘটানো শাস্তি যোগ্য অপরাধ

** বিএমডিসির সংশোধিত আইন অনুযায়ী পল্লী চিকিৎসক ও মেডিকেল অ্যাসিস্টেন্টরা তাদের নামের আগে ডাক্তার শব্দটি ব্যবহার করতে পারবেন না। ন্যূনতম এমবিবিএস বা বিডিএস ডিগ্রিধারী না হলে কেউ নিজেকে ডাক্তার হিসেবে পরিচয় দিতে পারবেন না। এই বিধান অমান্য করে কেউ নিজের নামের আগে ডাক্তার শব্দ ব্যবহার করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে বিএমডিসি।

** বিএমডিসির আইনের ২২ (১) ধারায় বলা হয়েছে, নিবন্ধন ব্যতীত অ্যালোপ্যাথিক চিকিৎসা নিষিদ্ধ। অন্য কোনো আইনে যা কিছু থাকুক না কেনো এ আইনের অধীনে নিবন্ধন ব্যতীত কেউ নিজেকে মেডিকেল চিকিৎসক বা ডেন্টাল চিকিৎসক বলে পরিচয় প্রদান করতে পারবে না। কোনো ব্যক্তি এ ধারা লংঘন করলে ৩ বছরের কারাদণ্ড অথবা ১ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।

** ২৯ (১) ধারা অনুযায়ী ভুয়া পদবী ব্যবহার নিষিদ্ধ। এ আইনের অধীনে নিবন্ধনকৃত কোনো মেডিকেল চিকিৎসক বা ডেন্টাল চিকিৎসক এমন কোনো নাম, পদবী, বিবরণ ও প্রতীক এমনভাবে ব্যবহার বা প্রকাশ করবেন না যার ফলে তার কোনো অতিরিক্ত পেশাগত যোগ্যতা আছে মর্মে কেউ মনে করতে পারে। এমবিবিএস অথবা বিডিএস ডিগ্রিধারী ব্যক্তিরা ব্যতিত অন্য কেউ তাদের নামের পূর্বে ডাক্তার পদবী ব্যবহার করতে পারবেন না। কোনো ব্যক্তি এ উপধারা লংঘন করলে তাকে ওই একই দণ্ড পেতে হবে এবং অপরাধ অব্যাহত থাকলে প্রত্যেকবার তার পুনরাবৃত্তির জন্য ৫০ হাজার টাকা অর্থ দণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট: সাড়ে ৬ বছর ধরে বন্ধ ছাত্রাবাস, শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি

২০১০ সালের ৭ জানুয়ারি রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে সংঘর্ষে ছাত্রলীগের হামলায় নিহত হন ছাত্রমৈত্রীর রেজাওয়ানুল চৌধূরী সানি। এ ঘটনায় ক্যাম্পাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। ওই দিন বিকেল পাঁচটার মধ্যে শিক্ষার্থীদের আবাসিক ছাত্রাবাস ত্যাগের নিদের্শ দেওয়া হয়। এর কিছুদিন পর এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি  খুলে পড়াশোনার পরিবেশ স্বাভাবিক হলেও দীর্ঘ সাড়ে ছয় বছর ধরে বন্ধই রয়েছে ইনস্টিটিউটের তিনটি ছাত্রাবাস। ফলে অবকাঠামো থাকার পরেও আবাসন সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন নগরীর বাইরে থেকে আসা শিক্ষার্থীরা। এতে করে চরম ভোগন্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের। এ অবস্থায় দ্রুত ছাত্রাবাসগুলো খুলে দেওয়ার জোর দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে র্দীঘদিন ছাত্রাবাস বন্ধ থাকায় তা বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে সংস্কার না হওয়ায় ছাত্রাবাসগুলো খুলে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। তবে ছাত্রাবাস সংস্কার করে তা খুলে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ছাত্রলীগ ও ছাত্রমৈত্রীর দ্বন্দ্ব এখ...

ডিপ্লোমা কি অনার্স এর সমমান?

না ডিপ্লোমা অনার্সের সমমান নয়। বাংলাদেশের শিক্ষার মান কোনটা কি দেখতে নিচের ছবিটা দেখুন

ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াররা কিভাবে শাজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এ চান্স পেতে চান ?

শাহাজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের বেস্ট বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এর মধ্যে একটি । এখানকার কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (CSE) ফ্যাকাল্টি এবং ইলেক্ট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (EEE) এর ফ্যাকাল্টি এর ডিমান্ড বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (BUET) এর পরপরই । কেননা এই দুইটি ফ্যাকাল্টি বিশেষত CSE ফ্যাকাল্টি এর দায়িত্বে রয়েছেন আমাদের সকলের অতি পরিচিত মুখ আর আমাদের শ্রদ্ধাভাজন " ডঃ মুহাম্মদ জাফর ইকবাল স্যার" । এই কথা শুনে ডিপ্লোমা স্টুডেন্ট কিংবা ডুয়েটিয়ান রা যত চিল্লাচিল্লি করুক না কেন শেষ পর্যন্ত যখন জব মার্কেট কে এনালাইসিস করবে সকলে এবং সেই সাথে যখন দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তিবিদ দের পরামর্শ নিবেন তখনই বুঝতে পারবেন কথাটি কতটুকু সত্য । যাই হউক এবার আসি মুল বক্তব্য এ । একথা সত্য যে যে ডুয়েট এর জন্য প্রস্তুতি নেওয়া ব্যাতিরখে কেউ কখনও শাহাজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এ ভর্তির আশা কোনভাবেই করতে পারে না ।